Sachin Tendulkar. ( Photo Source: X(Twitter):
২০২৩ সালে বিশ্বকাপ নিয়ে ভারতের মাটিতে চারবার বিশ্বকাপ হবে। এর আগে এখনও পর্যন্ত মাত্র তিনবারই ভারত বি্শ্বকাপ আয়োজনের দায়িত্ব। সেখানেই ২০১১ সালে বিশ্বকাপ জিতলেও, বাকি দুটো বিশ্বকাপে ঘরের মাঠে ভারতকে ব্যর্থ হয়েই মাঠ ছাড়তে হয়েছিল। যদিও এরমধ্যে ১৯৯৬ সালের বিশ্বকাপ সেমিফাইনালের সেই দুঃসহ স্মৃতি এখনও সকলের মনে টাটকা রয়েছে। সচিন তেন্ডুলকরের সেই স্টাম্প আউট এবং বিনোদ কাম্বলির সেই কান্নার দৃশ্য এখনও সকলের স্পষ্ট মনে রয়েছে। বিশ্বকাপের কথা উঠলে ভারতীয় চোখের সামনে ১৯৯৬ বিশ্বকাপের সেই স্মৃতি যে এখনও ভেসে ওঠে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এবারও একটা সেমিফাইনালের দায়িত্ব পেয়েছে ইডেন গার্ডেন্স।
আর সেই ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই যে ১৯৯৬ সালের বিশ্বকাপ সেই ইডেন সেমিফাইনালের অভিশপ্ত রাতের কথা সকলের স্মৃতিতে আরও বেশী করে আসতে শুরু করেছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। ১৯৯৬ সালে যে গতিতে বিশ্বকাপের মঞ্চে টিম ইন্ডিয়া এগিয়ে চলেছিল ক্রমশই সকলের হট ফেভারিট হয়ে উঠতে শুরু করেছিল। ইনডেন গার্ডেন্সে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ভারতের জয়ের স্বাক্ষী হতে সেদিন উপস্থিত ছিল অসংখ্য দর্শক। কিন্তু জয় নয়, সেদিনের রাতটা ইডেনে ভারতীয় দলের কাছে বিভীষিকার থেকে কম কিছু ছিল না। কম রান তাড়া করতে নেমে ভারতীয় দলের তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়া ব্যাটিং লাইনআপ। শেষ মুহূর্তে হতাশ দর্শকদের মেজাজ হারানো এবং বিনোদ কাম্বলির চোখের জলে মাঠ ছাড়া।
এই সব স্মৃতি এখনও বোধহয় সকলকে কষ্টই দেয়। সদ্য বেঙ্গালুরুতে কোয়ার্টার ফাইনালে চির প্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানকে হারিয়ে ইডেনে এসেছিল ভারতীয় দল। ভারতের বিশ্বকাপ জয় নিয়ে সেই থেকেই উত্তেজনার পারদ ছিল তুঙ্গে। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে সেই ম্যাচে শুরুটাও ভারতীয় দল করেছিল অসাধারণ।কিন্তু শেষরক্ষা করতে পারকেননি সচিনব তেন্ডুলকর, মহম্মদ আজজহারউদ্দিনরা। ক্রিকেটের নন্দনকাননে সেদিন চোখের জলেই বিদায় জানাতে হয়েছিল বিনোদ কাম্বলিদের।
ম্যাচ হেরে চোখের জলে সেদিন মাঠ ছেড়েছিলেন বিনোদ কাম্বলি
Vinod Kumbli. ( Photo Source: X(Twitter)
মহম্মদ আজহারউদ্দিন টস জিতে সেই ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সুযোগ দিয়েছিলেন। শুরুতেই জয়সূর্য, কালুইতরানা এবং গুরুসিংহেদের সাজঘরের রাস্তা দেখিয়ে দিয়েছিলেন জাভাগল শ্রীনাথ। অরবিন্দ ডিসিলভা এবং রোশন মহানামার অর্ধশতরান পরিস্থিতির সামাল দিলেও, ইডেনের মাটিতে ভারতের কাছে তা সহজ লক্ষ্যই ছিল। ৮ উইকেটে হারিয়ে সেই ম্যাচে শ্রীলঙ্কা করতে পেরেছিল মাত্র ২৫১ রান।
স্বভাবতই সেই সময়ে গ্যলারী জুড়ে ভারতীয় দলকে নিয়ে উন্মাদনাটাও ছিল তুঙ্গে। এরপর মাঠে যখন সচিন ঝড় শুরু হয়েছিল তখন দর্শকদের উচ্ছ্বাস চিল সীমাহীন। ওপেনিংয়ে নভজোত সিং সিধু ব্যর্থ হয়েছিলেন। কিন্তু মাস্টার ব্লাস্টা্রের ব্যাট ভরসা যোগাচ্ছিল ভারতীয় দলকে। বাকি ব্যাটাররা না পারলেও, একদিক থেকে সচিন তেন্ডুলকর একাই যেন দায়িত্ব তুলে নিয়েছিলেন। তাল কাটল দলের ৯৯ রানের মাথাায় সচিন যখন ফিরে গেলেন।
স্টাম্প আউট হয়ে৬৫ রানে থেমেছিল সচিনের ইনিংস। এরপর ভারতের ব্যাটিং লাইনআপ তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়েছিল।ক্রিজে বিনোদ কাম্বলি ছিলেন। আশিস কাপুর আউট হয়ে ফেরার পরই নিজেদের হতাশা আর ধরে রাখতে পারেনি ভারতীয় দলের সমর্থকরা। সেই সময় ভারতের রান ৮ উইকেটে ১২০। এরপরই মাঠে জলের বোতল, নানান জিনিস ছুড়তে থাকে উন্মত্ত দর্শক। খেলা বন্ধ। ক্লাইভ লয়েড মাঠে নামেন এবং পরিস্থিতিত ক্রমশই উত্তপ্ত হতে দেখে শেষপর্যন্ত শ্রীলঙ্কাকে জয়ী ঘোষণা করেন । এরপরই কান্নায় ভেঙে পড়েন বিনোদ কাম্বলী। সেই দুঃসহ স্মৃতি আজও যেন বয়ে বেড়াচ্ছে ভারতীয় দল।
আগামী ৫ সেপ্টেম্বর ভারতের মাটিতে ফের বিশ্বকাপ। ইডেন গার্ডেন্সে রয়েছে সেমিফাইনালের ম্যাচ। আবারও সেই স্মৃতি ফিরে আসবে না তো।
The post বিশ্বকাপের ঢাকে কাঠি পড়ে গেছে, ফ্ল্যাশব্যাকে ১৯৯৬- এর ইডেন সেমিফাইনাল appeared first on CricTracker Bengali.